খানা খাওয়ার আদব ও সুন্নত সমূহ

খানা খাওয়ার ২০ টি সুন্নত দেখুন দলিলসহ

১. উভয় হাত কব্জি পর্যন্ত ধোয়া (আবু দাউদ - 3761)

২. দস্তরখানা বিছিয়ে খানা খাওয়া (বুখারী শরীফ - 5386)

৩. (উঁচু স্বরে) বিসমিল্লাহ পড়া (বুখারী শরীফ - 5376)

৪. ডান হাত দিয়ে খাওয়া (বুখারী শরীফ - 5376)

৫. খানার মজলিসে বয়সের দিক দিয়ে যিনি বড় এবং বুযুর্গ, তাঁর দ্বারা খানা শুরু করানো (মুসলিম শরীফ - 2017)

৬. খাদ্য এক ধরনের হলে নিজের সম্মুখ হতে খাওয়া (বুখারী শরীফ - 5376)

৭. খাদ্যের কোন অংশ পড়ে গেলে উঠিয়ে (প্রয়োজনে পরিষ্কার করে) খাওয়া (মুসলিম শরীফ - 2033)

৮. হেলান দিয়ে বসে না খাওয়া (বুখারী শরীফ - 5398)

৯. খাদ্যের ত্রুটি বের না করা (বুখারী শরীফ - 5409)

১০. জুতা পরিহিত থাকলে জুতা খুলে খানা খাওয়া (মুস্তাদরাকে হাকেম- ৭১২৯)

১১. খানার সময় তিনভাবে বসা যায়

# উভয় হাঁটু উঠিয়ে এবং পদ যুগলে ভর করে বসা (মুসলিম শরীফ - ২০৪৪)

# এক হাঁটু উঠিয়ে এবং অপর হাঁটু বিছিয়ে বসা (শরহুস্‌ সুন্নাহ - ৩৫৭৭)

# উভয় হাঁটু বিছিয়ে অর্থাৎ নামাযে বসার ন্যায় বসে সামান্য সম্মুখ পানে ঝুঁকে আহার করা (আবু দাউদ - ৩৭৭৩)

বি.দ্র. উযরের কারণে আসন দিয়ে বসারও অনুমতি আছে (সূরা নূর আয়াত-৬১, আল ইতহাফ ৫ : ৪৮০)

১২. আহার গ্রহণ শেষে খানার পাত্রসমূহ আঙ্গুল দ্বারা ভালভাবে চেটে পরিস্কার করে খাওয়া। এতে খাবারের পাত্রসমূহ আহারকারীর জন্য মাগফিরাত কামনায় মহান আল্লাহর দরবারে দু‘আ করে। হাতের আঙ্গুলসমূহ যথাক্রমে মধ্যমা, শাহাদাত, বৃদ্ধা চেটে খাওয়া (মুসলিম শরীফ - ২০৩৩, তিরমিযী - ১৮০৪)

১৩. খানা শেষে এই দু‘আ পড়া

উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আতআমানা ওয়াছাকানা ওয়াজাআলানা মিনাল মুসলিমিন।’ (বুখারি শরীফ - ৫৪৫৮)

অর্থঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি আমাদের খাওয়ালেন, পান করলেন এবং আমাদেরকে মুসলিম বানিয়েছেন।

এই দোয়া খাওয়ার পরে পড়লে গুনাহ মাফ হয়

উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লাহিল্লাযি আত'আমানি হাযা ওয়া রাজাকনি মিন গাইরি হাওলিম মিন্নি ওয়ালা কুওয়াতি (মিশকাত, আবু দাউদ, আহমদ, ইবনে মাজা, তিরমিযী - ৩/১৫৯)


১৪. খানা শেষে আগে দস্তরখানা উঠিয়ে তারপর নিজে উঠা (ইবনে মাজাহ - ৩২৯৫)

১৫. দস্তরখানা ও অবশিষ্ট খানা উঠানোর সময় এই দু‘আ পড়া

الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ غَيْرَ مَكْفِىٍّ وَلاَ مُوَدَّعٍ وَلاَ مُسْتَغْنًى عَنْهُ رَبَّنَا

উচ্চারণ: আলহামদুলিল্লাহি হামদান কাসিরান ত্বয়্যিবান মুবারাকান ফিহি, গায়রা মাকফিইন, ওলা মুয়াদ্দায়িন ওলা মুসতাগনা আনহু রাব্বানা। (বুখারী শরীফ - ৫৪৫৮)

অর্থঃ হে আমাদের রব, এত্থেকে কখনো মুখ ফিরিয়ে নিতে পারব না, বিদায় নিতে পারব না এবং এ থেকে বেপরওয়া হতেও পারব না। 

১৬. খানা খেয়ে উভয় হাত ধোয়া (তিরমিযী - 1846)

১৭. কুলি করে মুখ পরিষ্কার করা (বুখারী শরীফ - 5455)

১৮. খানার শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়তে ভুলে গেলে স্মরণ হওয়ার পর নিম্নোক্ত দু‘আ পড়া

بِسْمِ اللهِ اَوَّلَهُ وَآخِرَهْ

উচ্চারণ: বিসমিল্লাহি ফি আওয়ালিহি ওয়া আখিরিহি।

অর্থ: ‘(খাওয়ার) শুরুতে ও (খাওয়ার) শেষে আল্লাহর নামে।’ (আবু দাউদ - ৩৭৬৭)

১৯. কারো মেহমান হয়ে খানা খেলে প্রথমে আল্লাহর শুকর আদায়ে ১৩ নং এ বর্ণিত দু‘আ পড়ার পর, মেযবানের শুকরিয়া আদায়ে এই দু‘আ পড়া (মুসলিম - ২০৫৫)

اَللّهُمَّ اَطْعِمْ مَنْ اَطْعَمَنِيْ وَإسْقِ مَنْ سَقَانِيْ

উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা আত্ব‘ইম মান আত্ব‘আমানী ওয়াসক্বি মান সাক্বা-নী’। 

অর্থঃ হে আল্লাহ, যে আমাকে খাওয়ালো তাকে তুমি খাওয়াও এবং যে আমাকে পান করালো তাকে পান করাও

২০. খানা খাওয়ার সময় একেবারে চুপ থাকা মাকরূহ। এজন্য খাওয়ার ফাঁকে ফাঁকে পরস্পরে ভাল কথা আলোচনা করা। কিন্তু যে ধরনের কথা বা সংবাদে দুশ্চিন্তা বা ঘৃণার উদ্রেক হতে পারে, তা খানার সময় বলা অনুচিত (বুখারী শরীফ - ৫৩৭৬)

দুধ পান করার দোয়া

উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফিহি ওয়াজিদনা মিনহু।’

অর্থ: হে আল্লাহ! এই খাবারে আমাদের বরকত দিন