সর্বমোট সময়ঃ ২০ মিনিট।
আমলের সময়ঃ এই নামাজ দিনে অথবা রাতে যে কোনো সময় আদায় করা যায়। তবে উত্তম হচ্ছে নফল ইবাদতের সময় আদায় করা, অর্থাৎ রাতে এবং নিরিবিলি পরিবেশে আদায় করা ভালো।
✅ হাদীসে সালাতুত তাসবীহ
রাসুল (সা.) তার চাচা হজরত আব্বাস (রা.)-কে বলেন, ‘চাচা, পারলে আপনি সালাতুল তাসবিহ নামাজ সপ্তাহে একবার, তাও না হলে মাসে একবার, তাও না পারলে বছরে একবার পড়বেন। তাতেও অক্ষম হলে অন্তত জীবনে একবার হলেও এ নামাজ পড়বেন। এ নামাজ দ্বারা জীবনের ছোট, বড়, স্বেচ্ছায়, অনিচ্ছায়, নতুন, পুরনো, গোপন, প্রকাশ্য সব রকম অপরাধ মাফ হয়ে যায়। (আবু দাউদ-হাদিস: ১২৯৭, ইবনে মাজাহ-আলখিছাল : ১/৪১, হাদিসটি সহীহ)
তাসবীহ:
سُبْحَانَ اللَّهِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاللَّهُ أَكْبَرُ
বাংলা উচ্চারণ:
সুবহা- নাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহ, ওলা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার।
লক্ষ্য করুন:
“সুবহা” শব্দের ‘হা’ বর্ণটি এক আলিম লম্বা হবে এবং তা বড় করে পড়তে হবে। কেননা এটা বড় হা। আর “হামদুলিল্লাহ” শব্দের প্রথম হা বড় হা আর শেষ হা ছোট হা। তাই প্রথম শব্দ ভালো করে সঠিক মাখরাজ থেকে অর্থাৎ বড় করে পড়তে হবে।
আর আপনি যদি এক টানে তাসবীহটি পড়তে চান, তাহলে “হামদুলিল্লাহ” শব্দটি “হামদুলিল্লাহি” পড়তে হবে।
✅ নিয়ম
সালাতুত তাসবীহ চার রাকাত। প্রতি রাকাতে ‘সুবাহানাল্লাহ, ওয়াল হামদুলিল্লাহ, ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার’ তাসবীহগুলো ৭৫ বার পড়তে হয়। চার রাকাতে মোট ৩০০ বার পড়তে হয়।
- প্রথম রাকাতে সানা পড়ার পর ১৫ বার পড়তে হবে
- তারপর সূরা ফাতিহা তারপর কোরআন থেকে কেরাত পাঠ (সুরা মিলানো) সম্পন্ন হবার পর দাঁড়ানো অবস্থায় রুকুতে যাওয়ার পুর্বে ১০ বার।
- রুকু করবে এবং রুকু অবস্থায় দোয়ার পর ১০ বার পাঠ করতে হবে।
- রুকু থেকে মাথা ওঠানোর পর সোজা হয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় (রাব্বানা লাকাল হামদ পড়ার পর) এ তাসবিহ ১০ বার পাঠ করতে হবে।।
- তারপর সিজদায় যাবে এবং সিজদার দোয়ার পর ১০ বার পাঠ করবে।
- সিজদা থেকে মাথা ওঠানোর পর (দুই সেজদার মাঝখানে ১০ বার।)
- পুনরায় সিজদা গিয়ে সিজদার দোয়ার পর ১০ বার পাঠ করবে।
সিজদা থেকে দাড়িয়ে আবার দ্বিতীয় রাকাতে একি ভাবে তাসবিহ পাঠ করতে হবে। দ্বিতীয় রাকাতের সিজদার পর প্রথম বৈঠকে আত্তাহিয়াতু শেষ করে এরপর আবার তৃতীয় রাকাতের জন্যে দাড়িয়ে পূর্বের রাকাতগুলোর ন্যায় নামাজ আদায় করতে হবে এভাবে চতুর্থ রাকাতটিও শেষ করতে হবে।
✅ সালাতুত তাসবিহ নামাজে তাসবীহ পড়তে ভুলে গেলে যা করবেন
কোনো এক স্থানে উক্ত তাসবীহ পড়তে সম্পূর্ণ ভুলে গেলে বা ভুলে নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে কম পড়লে, পরবর্তী যে খানেই স্মরণ হোক, সেখানেই তথাকার সংখ্যার সাথে এই ভুলে যাওয়া সংখ্যাগুলোও আদায় করতে হবে। আর, এই নামাযে কোনো কারনে সিজদাহে সাহু ওয়াজিব হলে সেই সিজদা এবং তার মধ্যকার বৈঠকে উক্ত তাসবীহ পাঠ করতে হবে না।
✅ সালাতুত তাসবীহ নামাজে যা করা যাবে না
‘সালাতুত তাসবীহ’ নামায পড়াবস্থায় দানাদার তসবিহ হাতে গণনা করা মাকরূহ বা অনুচিত। আঙ্গুলের করগুলোতে গণনা করা যাবেনা। কিন্তু তাহরিমা বাধা অবস্থাতেই হাতের আঙ্গুল গুলা টিপেটিপে তাসবীহ গণনা করতে হবে।
আর কেহ যদি উপরোক্ত তাসবীহ বা কালেমার পরে “ওলা হাওলা ওলা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যুল আজিম” যোগ করে, তবে তা উত্তম হবে।
তথ্যসূত্র: wikipedia.org